সকল
Mufti Abdur Rahman Hoosainee
শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ এ ৮:৫০ PM
ইমাম সাহেব ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়াপ্রশ্ন : ইমাম সাহেব আসরের নামাজে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলে মাসবুক ব্যক্তিগণ কী করবেন এবং তাদের নামাজের বিধান কী ?
حامدا ومصلياউত্তর : ১. যদি ইমাম সাহেব শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর ভুলে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে ৫ম রাকাতের সিজদা করার আগ পর্যন্ত যখনই মনে হবে তখনই বৈঠকে ফেরত আসবেন এবং সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করবেন, তাহলে সকলের নামাজ সহিহ হবে। কিন্তু যদি ৫ম রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে আরো ১ রাকাত যুক্ত করে মোট ৬ রাকাত পড়বেন এবং শেষে সিজদায়ে সাহু করবেন, তাহলে ইমাম ও সেই মুক্তাদিরা—যারা শুরু থেকে ইমামের সঙ্গে নামাজে শরিক ছিলেন—তাদের সবার নামাজ সহিহ হবে। এক্ষেত্রে ৪ রাকাত ফরজ হবে এবং ২ রাকাত নফল হবে।তবে এই অবস্থায় মুক্তাদির (যিনি শুরু থেকে নামাজে শরিক আছেন) জন্য করণীয় হলো,সে ইমামের সাথে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়াবে না, বরং ইমামের ফিরে আসার অপেক্ষা করবে। যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের সিজদা করার আগেই ফিরে আসেন, তাহলে মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ করবে, ইমামের সাথে সাহু সিজদা আদায় করবে এবং ইমামের সাথে সালাম ফেরাবে, এতে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।কিন্তু যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে মুক্তাদি একা সালাম ফিরিয়ে দেবে, এতে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।২. যদি ইমাম সাহেব শেষ বৈঠক না করে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যান, তাহলে ৫ম রাকাতের সিজদা করার আগ পর্যন্ত যখনই মনে হবে তখনই বৈঠকে ফেরত আসবেন এবং সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করবেন, তাহলে সকলের নামাজ সহিহ হবে। কিন্তু যদি ৫ম রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে ফরজ নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। ইমাম ও সকল মুক্তাদির জন্য এই ফরজ নামাজ পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে। আর এক্ষেত্রে করণীয় হলো, ৫ম রাকাতের সাথে ৬ষ্ঠ রাকাত যোগ করা, তাহলে ৬ রাকাতই নফল হয়ে যাবে।তবে এই অবস্থায় মুক্তাদির (যিনি শুরু থেকে নামাজে শরিক আছেন) জন্য করণীয় হলো,সে ইমামের সাথে দাঁড়াবে না, বরং ইমামের ফিরে আসার অপেক্ষা করবে। যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের সিজদা করার আগেই ফিরে আসেন, তাহলে মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ করবে, ইমামের সাথে সাহু সিজদা আদায় করবে এবং ইমামের সাথে সালাম ফেরাবে, এতে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।কিন্তু যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে ইমাম ও মুক্তাদি সবার ফরজ নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। সবার জন্য উক্ত ফরজ নামাজ নতুন করে পড়া আবশ্যক হবে।মাসবুক ব্যক্তির বিধান:১. যদি ইমাম শেষ বৈঠকে বসার পর ভুলবশত পঞ্চম রাকাতে দাঁড়িয়ে যান, তবে মাসবুক (যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রথম রাকাত পাননি) ইমামের অনুসরণ করে দাঁড়াবে না। বরং সে তাশাহহুদে বসে ইমামের অপেক্ষা করবে, যতক্ষণ না ইমাম আবার বৈঠকে ফিরে আসে। যখন ইমাম ফিরে আসবেন, তখন তার সঙ্গে সাহু সিজদা করবে। এরপর ইমাম সালাম ফেরানোর পর মসবুক তার বাকি নামাজ সম্পন্ন করবে।কিন্তু যদি ইমাম শেষ বৈঠকে ফিরে না আসেন এবং পঞ্চম রাকাতও আদায় করে ফেলেন, তাহলে মসবুক তখন দাঁড়িয়ে তার বাকি নামাজ সম্পন্ন করবে। এ ক্ষেত্রে, মসবুকও যদি ইমামের অনুসরণ করে পঞ্চম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তবে দাঁড়ানোর সাথে সাথেই তার নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।২. যদি ইমাম শেষ বৈঠক না করে ভুলবশত পঞ্চম রাকাতে দাঁড়িয়ে যান এবং মসসবুকও তার অনুসরণ করে দাঁড়িয়ে যায়, তবে শুধু দাঁড়ানোর কারণে মসবুকের নামাজ নষ্ট হবে না, যতক্ষণ না ইমাম পঞ্চম রাকাতের সিজদা করেন। এজন্য এই অবস্থায় ইমাম যদি পঞ্চম রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে ইমামসহ সব মুসল্লির (মাসবুকসহ) নামাজ নফল হয়ে যাবে এবং সবার ওপর ঐ ফরজ নামাজ পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে।المستندات الشرعيةالفتاوى الهندية: (٩٠/١، ط: دار الفكر)(وَأَرْبَعَةُ أَشْيَاءَ إِذَا تَعَمَّدَ الْإِمَامُ لَا يُتَابِعُهُ الْمُقْتَدِي) زَادَ فِي صَلَاتِهِ سَجْدَةً عَمْدًا ... أَوْ قَامَ إِلَى الْخَامِسَةِ سَاهِيًا. كَذَا فِي الْوَجِيزِ لِلْكَرْدَرِيِّ. فَإِنْ لَمْ يُقَيِّدِ الْخَامِسَةَ بِالسَّجْدَةِ وَعَادَ وَسَلَّمَ سَلَّمَ الْمُقْتَدِي مَعَهُ، وَإِنْ قَيَّدَ الْخَامِسَةَ بِالسَّجْدَةِ سَلَّمَ الْمُقْتَدِي. وَلَوْ لَمْ يَقْعُدِ الْإِمَامُ عَلَى الرَّابِعَةِ وَقَامَ إِلَى الْخَامِسَةِ سَاهِيًا وَتَشَهَّدَ الْمُقْتَدِي وَسَلَّمَ ثُمَّ قَيَّدَ الْإِمَامُ الْخَامِسَةَ بِالسَّجْدَةِ فَسَدَتْ صَلَاتُهُمْ. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.وَفِيهَا أَيْضًا: (٩٢/١، ط: دار الفكر)وَلَوْ قَامَ الْإِمَامُ إِلَى الْخَامِسَةِ فَتَابَعَهُ الْمَسْبُوقُ، إِنْ قَعَدَ الْإِمَامُ عَلَى رَأْسِ الرَّابِعَةِ تَفْسُدُ صَلَاةُ الْمَسْبُوقِ، وَإِنْ لَمْ يَقْعُدْ لَمْ تَفْسُدْ حَتَّى يُقَيِّدَ الْخَامِسَةَ بِالسَّجْدَةِ، فَإِذَا قَيَّدَهَا بِالسَّجْدَةِ فَسَدَتْ صَلَاةُ الْكُلِّ. هَكَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَان.الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (٢/١٢):"وَأَرْبَعَةٌ لَا يُتَّبَعُ فِيهَا: زِيَادَةُ تَكْبِيرِ عِيدٍ، أَوْ جَنَازَةٍ، وَرُكْنٍ، وَقِيَامٌ لِخَامِسَةٍ.(قَوْلُهُ: وَقِيَامٌ لِخَامِسَةٍ) دَاخِلٌ تَحْتَ قَوْلِهِ: وَرُكْنٍ، تَأَمَّلْ. قَالَ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ: ثُمَّ فِي الْقِيَامِ إِلَى الْخَامِسَةِ، إِنْ كَانَ قَعَدَ عَلَى الرَّابِعَةِ، يَنْتَظِرُهُ الْمُقْتَدِي قَاعِدًا، فَإِنْ سَلَّمَ مِنْ غَيْرِ إِعَادَةِ التَّشَهُّدِ سَلَّمَ الْمُقْتَدِي مَعَهُ، وَإِنْ قَيَّدَ الْخَامِسَةَ بِسَجْدَةٍ سَلَّمَ الْمُقْتَدِي وَحْدَهُ؛ وَإِنْ كَانَ لَمْ يَقْعُدْ عَلَى الرَّابِعَةِ، فَإِنْ عَادَ تَابَعَهُ الْمُقْتَدِي، وَإِنْ قَيَّدَ الْخَامِسَةَ فَسَدَتْ صَلَاتُهُمْ جَمِيعًا، وَلَا يَنْفَعُ الْمُقْتَدِي تَشَهُّدُهُ وَسَلَامُهُ وَحْدَهُ. اهـ".وفيه أيضًا (١/٥٩٩):"وَلَوْ قَامَ إِمَامُهُ لِخَامِسَةٍ فَتَابَعَهُ، إِنْ بَعْدَ الْقُعُودِ تَفْسُدُ، وَإِلَّا لَا حَتَّى يُقَيِّدَ الْخَامِسَةَ بِسَجْدَةٍ.(قَوْلُهُ: إِنْ بَعْدَ الْقُعُودِ) أَيْ قُعُودُ الْإِمَامِ الْقَعْدَةَ الْأَخِيرَةَ. (قَوْلُهُ: تَفْسُدُ) أَيْ صَلَاةُ الْمَسْبُوقِ؛ لِأَنَّهُ اقْتِدَاءٌ فِي مَوْضِعِ الْإِنْفِرَادِ، وَلِأَنَّ اقْتِدَاءَ الْمَسْبُوقِ بِغَيْرِهِ مُفْسِدٌ، كَمَا مَرَّ. (قَوْلُهُ: وَإِلَّا) أَيْ وَإِنْ لَمْ يَقْعُدْ وَتَابَعَهُ الْمَسْبُوقُ لَا تَفْسُدُ صَلَاتُهُ؛ لِأَنَّ مَا قَامَ إِلَيْهِ الْإِمَامُ عَلَى شَرَفِ الرَّفْضِ، وَلِعَدَمِ تَمَامِ الصَّلَاةِ. فَإِنْ قَيَّدَهَا بِسَجْدَةٍ انْقَلَبَتْ صَلَاتُهُ نَفْلًا، فَإِنْ ضَمَّ إِلَيْهَا سَادِسَةً يَنْبَغِي لِلْمَسْبُوقِ أَنْ يُتَابِعَهُ، ثُمَّ يُقْضِيَ مَا سُبِقَ بِهِ، وَتَكُونَ لَهُ نَافِلَةً كَالْإِمَامِ، وَلَا قَضَاءَ عَلَيْهِ لَوْ أَفْسَدَهَا؛ لِأَنَّهُ لَمْ يُشْرَعْ فِيهَا قَصْدًا، رَحْمَتِي".والله تعالى أعلمউত্তর প্রদানেমুফতি আবদুর রহমান হোসাইনীপরিচালকসেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ১২/৬/১৪৪৬ হিজরি