بسم الله الرحمن الرحيم

Shawwal 21, 1446h April 19, 2025

menu

সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা
Center For Research And Islamic Studies, Dhaka

public/icons8-arrow-back-96.pngসকল

Mufti Abdur Rahman Hoosainee

শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ এ ৯:০৫ PM

সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলাদের কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত, সংগীত, ওয়াজ ও বক্তব্য আপলোড করা এবং তা শোনাপ্রশ্ন : সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলাদের কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত, সংগীত, ওয়াজ ও বক্তব্য আপলোড করা এবং তা শোনার বিধান কী ?

حامدا ومصلياউত্তর : ১. ইসলামি শরিয়াহর নির্দেশনা হলো, নারী যেন প্রয়োজন ছাড়া এত জোরে কথা না বলে যে, তার আওয়াজ পর পুরুষের কানে পৌঁছে। এজন্য ইবাদতের ক্ষেত্রেও এই বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা হয়েছে। যেমন, মহিলাদেরকে আজান দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। কারণ যদি মহিলাদেরকে এই দায়িত্ব দেওয়া হতো, তাহলে তাদের আওয়াজ পর পুরুষের কানে যেত। তাছাড়া মহিলারা নামাজে নিম্নস্বরে কেরাত পড়তে হয়। তেমনিভাবে হজের তালবিয়া পাঠের ক্ষেত্রেও তারা নিম্নস্বরে পাঠ করে ইত্যাদি। এজন্য ইসলামের বিধান হলো : শরিয়াহ সম্মত কোনো জরুরতের কারণে মহিলার জন্য পর পুরুষের সাথে পর্দা রক্ষা করে কথা বলা জায়েজ। পুরুষের জন্যও একই বিধান প্রযোজ্য। তবে শর্ত হলো : এক. নির্জনে দেখা করে কথা বলা যাবে না। দুই. যতটুকু শরয়ি প্রয়োজন ততটুকু কথা বলবে।তিন. প্রয়োজন অতিরিক্ত আলাপ-আলোচনা করা যাবে না। চার. প্রেমালাপ, খোশগল্প করা যাবে না। পাঁচ. সুরেলা কন্ঠে কথা বলা যাবে না। মহান আল্লাহ রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীদের লক্ষ্য করে বলেছেন, یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسۡتُنَّ کَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیۡتُنَّ فَلَا تَخۡضَعۡنَ بِالۡقَوۡلِ فَیَطۡمَعَ الَّذِیۡ فِیۡ قَلۡبِہٖ مَرَضٌ وَّقُلۡنَ قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا ۚ হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।-আল আহজাব - ৩২শাইখুল ইসলাম আল্লামা মুফতি তাকি উসমানি হাফি. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন,এ আয়াত নারীদেরকে গায়রে মাহরাম বা পর পুরুষের সাথে কথা বলার নিয়ম শিক্ষা দিয়েছে। বলা হয়েছে যে, ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সাথে মধুর ও আকর্ষণীয় ভাষায় কথা বলা উচিত নয়। তাই বলে তিক্ত ও রুক্ষ্ম ভাষা ব্যবহার করাও ঠিক নয়; বরং সাদামাটাভাবে প্রয়োজনীয় কথাটুকু বলে দেবে। এর দ্বারা অনুমান করা যায় যে, সাধারণ কথাবার্তায়ও যখন নারীদেরকে এরূপ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তখন পর পুরুষের সামনে সুর দিয়ে কবিতা পড়া বা গান-বাদ্য করা কী পরিমাণ গর্হিত হবে!-তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন ৩/৭৯ ¬¬¬২. মহিলার আওয়াজ শোনার দ্বারা যেহেতু পুরুষ মহিলার প্রতি আকর্ষণবোধ করে, এজন্য এই ফিতনার আশঙ্কা থাকার কারণে ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞরা মহিলার আওয়াজকে পর্দার অন্তর্ভুক্ত বলেছেন। অতএব শরয়ি প্রয়োজন ছাড়া পর পুরুষের সাথে কথা বলা নিষিদ্ধ। ৩. সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রপ্ত বয়স্ক মেয়েদের কুরআন তিলাওয়াত, সংগীত, ওয়াজ ও বক্তব্য আপলোড করা নাজায়েজ। যদি কেউ আপলোড করে, তাহলে পর পুরুষের জন্য তা শোনা জায়েজ নয়। উল্লেখ্য, অডিও আপলোড করা হোক কিংবা ভিডিও আপলোড করা হোক—বিধান অপরিবর্তিত থাকবে। বরং ক্ষেত্র বিশেষ পাপের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ৪. যদি ভিডিও আপলোড করা হয়, তাহলে পাপের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। কারণ তখন প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে সেজেগুজে নিজেকে পর পুরুষের সামনে প্রদর্শন করে, যা সম্পূর্ণ হারাম কাজ। অপরদিকে বেগানা পুরুষ বেগানা মহিলাকে দেখে। এটাও হারাম কাজ। মহান আল্লাহ বলেন قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِهِمۡ وَ یَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَهُمۡ ؕ ذٰلِكَ اَزۡكٰی لَهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ.মুমিন পুরুষদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য শুদ্ধতর। তারা যা-কিছু করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।সুরা আন নূর, আয়াত ৩০।ইবনে মাজাহ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَنَحْنُ مُحْرِمُونَ فَإِذَا لَقِيَنَا الرَّاكِبُ أَسْدَلْنَا ثِيَابَنَا مِنْ فَوْقِ رُءُوسِنَا فَإِذَا جَاوَزَنَا رَفَعْنَاهَا.হজরত উম্মুল মুমিনিন আয়শা রাজি. বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—এর সাথে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা যখন আমাদের সামনাসামনি চলে আসত, তখন আমাদের সকলেই চেহারার ওপর ওড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে আবার তা সরিয়ে নিতাম।-ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৯৩৫এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখা আবশ্যক।৫. যেসকল মেয়েরা এখনো প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কাছাকাছি বয়সে উপনীত হয়েছে, তারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরআন তিলাওয়াত, সংগীত, ওয়াজ ও বক্তব্য আপলোড করা থেকে আবশ্যকীয়ভাবে বিরত থাকবেন। কারণ এতে ফিতনার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ৬. এসব ভিডিও-অডিও—এর মধ্যে যদি মিউজিক থাকে, তাহলে নাজায়েজ হওয়ার অতিরিক্ত আরেকটি কারণ যুক্ত হবে। ৭. যদি কোথাও শরিয়াহ সম্মত পরিবেশে শুধু মেয়েরা একত্রিত হয়, আর সেখানে প্রাপ্তবয়স্ক কোনো মেয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে বা ইসলামি সংগীত পরিবেশন করে কিংবা বক্তব্য দেয়, তাহলে সেটা জায়েজ হবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যেন আওয়াজ এত জোরে না হয় যে, তা পর পুরুষের কানে পৌঁছে যায়। ৮. অল্প বয়সী বালিকা, যারা এখনও প্রকৃত অর্থে শিশু রয়েছে, তাদের কুরআন তিলাওয়াত, সংগীত, ওয়াজ ও বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার সুযোগ রয়েছে। المستندات الشرعية ١. قوله تَعَالَى :{ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ } رَوَى أَبُو الْأَحْوَصِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ : ( هُوَ الْخَلْخَالُ ) ، وَكَذَلِكَ قَالَ مُجَاهِدٌ : ( إنَّمَا نُهِيت أَنْ تَضْرِبَ بِرِجْلَيْهَا لِيُسْمَعَ صَوْتُ الْخَلْخَالِ ) وَذَلِكَ قَوْلُهُ : { لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ } .قَالَ أَبُو بَكْرٍ : قَدْ عُقِلَ مِنْ مَعْنَى اللَّفْظِ النَّهْيُ عَنْ إبْدَاءِ الزِّينَةِ وَإِظْهَارِهَا لِوُرُودِ النَّصِّ فِي النَّهْيِ عَنْ إسْمَاعِ صَوْتِهَا ؛ إذْ كَانَ إظْهَارُ الزِّينَةِ أَوْلَى بِالنَّهْيِ مِمَّا يُعْلَمُ بِهِ الزِّينَةُ ، فَإِذَا لَمْ يَجُزْ بِأَخْفَى الْوَجْهَيْنِ لَمْ يَجُزْ بِأَظْهَرِهِمَا ؛ وَهَذَا يَدُلُّ عَلَى صِحَّةِ الْقَوْلِ بِالْقِيَاسِ عَلَى الْمَعَانِي الَّتِي قَدْ عَلَّقَ الْأَحْكَامَ بِهَا ، وَقَدْ تَكُونُ تِلْكَ الْمَعَانِي تَارَةً جَلِيَّةً بِدَلَالَةِ فَحْوَى الْخِطَابِ عَلَيْهَا وَتَارَةً خَفِيَّةً يُحْتَاجُ إلَى الِاسْتِدْلَالِ عَلَيْهَا بِأُصُولٍ أُخَرَ سِوَاهَا .وَفِيهِ دَلَالَةٌ عَلَى أَنَّ الْمَرْأَةَ مَنْهِيَّةٌ عَنْ رَفْعِ صَوْتِهَا بِالْكَلَامِ بِحَيْثُ يَسْمَعُ ذَلِكَ الْأَجَانِبُ ؛ إذْ كَانَ صَوْتُهَا أَقْرَبَ إلَى الْفِتْنَةِ مِنْ صَوْتِ خَلْخَالِهَا ؛ وَلِذَلِكَ كَرِهَ أَصْحَابُنَا أَذَانَ النِّسَاءِ ؛ لِأَنَّهُ يُحْتَاجُ فِيهِ إلَى رَفْعِ الصَّوْتِ وَالْمَرْأَةُ مَنْهِيَّةٌ عَنْ ذَلِكَ ، وَهُوَ يَدُلُّ أَيْضًا عَلَى حَظْرِ النَّظَرِ إلَى وَجْهِهَا لِلشَّهْوَةِ ؛ إذْ كَانَ ذَلِكَ أَقْرَبَ إلَى الرِّيبَةِ وَأَوْلَى بِالْفِتْنَةِ.أحکام القرآن للجصاص، ج:٣، ص:٤٦٥، ط:مکتبة رشیدیة.٢. وصوتها على الراجح وذراعيها على المرجوح.(قوله: وصوتها) معطوف على المستثنى يعني أنه ليس بعورة ح (قوله: على الراجح) عبارة البحر عن الحلية أنه الأشبه. وفي النهر وهو الذي ينبغي اعتماده. ومقابله ما في النوازل: نغمة المرأة عورة، وتعلمها القرآن من المرأة أحب. قال عليه الصلاة والسلام: «التسبيح للرجال، والتصفيق للنساء» فلايحسن أن يسمعها الرجل. اهـ. وفي الكافي: ولاتلبي جهرًا لأن صوتها عورة، ومشى عليه في المحيط في باب الأذان بحر. قال في الفتح: وعلى هذا لو قيل إذا جهرت بالقراءة في الصلاة فسدت كان متجها، ولهذا منعها عليه الصلاة والسلام من التسبيح بالصوت لإعلام الإمام بسهوه إلى التصفيق اهـ وأقره البرهان الحلبي في شرح المنية الكبير، وكذا في الإمداد؛ ثم نقل عن خط العلامة المقدسي: ذكر الإمام أبو العباس القرطبي في كتابه في السماع: ولا يظن من لا فطنة عنده أنا إذا قلنا صوت المرأة عورة أنا نريد بذلك كلامها، لأن ذلك ليس بصحيح، فإذا نجيز الكلام مع النساء للأجانب ومحاورتهن عند الحاجة إلى ذلك، ولا نجيز لهن رفع أصواتهن ولا تمطيطها ولا تليينها وتقطيعها لما في ذلك من استمالة الرجال إليهن وتحريك الشهوات منهم، ومن هذا لم يجز أن تؤذن المرأة. اهـ. قلت: ويشير إلى هذا تعبير النوازل بالنغمة.رد المحتار، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة، مطلب فى ستر العورة-١ : ٤٠٦ ، منحة الخالق على البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة- ١ : ٢٨٥. ٣. قوله: “إن صوتها عورة” هو ما في النوازل وجرى عليه في المحيط والكافي حيث عللا عدم جهرها بالتلبية بأن صوتها عورة قال في الفتح وعلى هذا لو قيل إذا جهرت بالقراءة في الصلاة فسدت كان متجها لكن قال ابن أمير حاج الأشبه أنه ليس بعورة وإنما يؤدي إلى الفتنة واعتمده في النهر أفاده السيد وظاهر هذا ان الخلاف في الجهر بالصوت فقط لا في تمطيطه وتليينه وهو ينافي ما قاله المصنف. حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-٢٤٦. ٤. سوال : میں نے اپنے گھر میں عرصہ سے تجوید بقدر احتیاج سکھائی ہے، اللہ کا شکرہے باقاعدہ پڑھنے لگی ہیں، جن لوگوں کو اِس اَمر کی اِطلاع ہے وہ کبھی آکر یوں کہتے ہیں کہ ہم سننا چاہتے ہیں، اور ہیں معتمد لوگ ، تو پردہ میں سنوا دینا جائز ہے یا نہیں ؟ اگرچہ ایسا کیا نہیں، بعد علم جیسا ہوگا ویسا کروں گا۔الجواب : ہرگز جائز نہیں۔ لِاَنَّه اِسْمَاعُ صَوْت الْمَرْأَةِ بِلا ضرورة شرعیة( کیونکہ یہ عورت کی آواز کو بغیر شرعی ضرورت کے سنانا ہے. امداد الفتاوی، ٤ : ٢٠٠، ط: دارالعلوم کراچی. والله تعالى أعلمউত্তর প্রদানেআবদুর রহমান হোসাইনীসেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা১৩/০৪/১৪৪৬ হিজরি

Copyright © 2024

সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা All rights reserved

Login